দোয়া করবেন যেন ৪ মাস পরপর দিতে পারি

শেয়ার করুন:

আসসালামু আলাইকুম।
আমি সর্বশেষ ৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখে রক্ত দিই এবং আমি প্রতি ৪ মাস পর পর রক্ত দিই। এইবার একটু দেরিতে হয়ে গেলো কারণ কিছু দিন আমার প্রেশার কম ছিলো, তারপর যখন আমি একটু স্বাভাবিক হয়ে গেলাম তখন অনেক জনকে বলে রেখেছিলাম- ভাইয়া আমি কিন্তু ৯ বার রক্তদান করেছি এইবার ১০ম বার রক্তদানের অপেক্ষায় আছি। এটা আমার জন্য একটু স্পেশাল তাই একটু পরিচিত রোগী হলে ভালো হয়। কারণ আমি এর আগে ৯ বারই অপরিচিত মানুষদের রক্তদান করেছি।
একদিন রাব্বী ইমন ভাইয়া বলল-
“আমার একটা পরিচিত রোগী আছে ঐটাকে ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে দিতে হবে” আমি তখন সাথে সাথে রাজি হয়ে বলি, হ্যাঁ ভাইয়া দেওয়া যাবে সমস্যা নাই। এইভাবে ১৫ তারিখ চলে আসলো কিন্তুু রোগীর কোন খবর নাই। আমি বার বার ইমন ভাইয়া কে বলেছি কি খবর রোগীর?
-তিনি বলেছেন জানাবে তবে এখনো জানাচ্ছে না। তাই আমি রাব্বী ইমন ভাইয়া কে বললাম ভাইয়া আমি অন্যকোথাও দিয়ে দিই।
– ভাইয়া বললেন হ্যাঁ, রোগী পাইলে দিয়ে দে।
এই ভাবে কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর আজকে (গতকাল) হঠাৎ করে সন্ধ্যা ৬:২৬ PM আমার বন্ধু খাইরুল ফোন দিয়ে বলল- “মীম একটা রোগীকে এমার্জেন্সি A+ রক্ত লাগে তুই দিতে পারবি?
-আমি তখন বললাম হ্যাঁ দিতে পারবো। তবে আমাকে নিয়ে যাইতে হবে, কারণ যেহেতু রাতের ব্যাপার। তখন রোগীর লোক কে আমার নাম্বার দিয়ে দিলো। আমি রোগীর লোকের সাথে কথা বললাম তখন রোগীর লোক আমার বলা নির্দিষ্ট স্থানে আসলো। তখন সময় সন্ধ্যা ৬:৪০ আমি সহ আমার বন্ধু মমিনুর রোগীর লোকের সাথে বাইকে করে রওনা দিলাম।
এবং ৭:২০ এ পঞ্চগড়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে এসে পৌঁছালাম। আলহামদুলিল্লাহ একটু পর রক্তদান সম্পন্ন করলাম।
অবশেষে রক্তদান করতে পেরে অনেক ভালো লাগতেছে। এ এক অন্যরকম অনুভূতি, যা বলে বুঝানোর মত না।

তবে আরেকটা কথা আপনাদের মাঝে একটু শেয়ার করি সেটা হলো অনেকে আমাকে বলেছে, মীম তোমার তো নিজের শরীরেই কিছু নাই তুমি আবার মানুষ কে কেনো রক্ত দাও?
আমি তাদের বলি দেখো ভাইয়া রক্ত দিলে কখনো ক্ষতি হয় না বরং নিজেকে ভালো লাগে। আমার একটু রক্তের জন্য যদি একটা মানুষের প্রাণ বাঁচে এর থেকে আনন্দ আমার কাছে আর নেই, রক্তদান করতে আমার বেশ ভালোই লাগে, আমার শুরুটা হয় ২০১৮ সাল থেকে। রনি মিয়াজী ভাইয়ার হাত ধরে এতো দূর আসা। যেই আমি মানুষটা একটু ফুটা করতে অনেক ভয় পাইতাম আজ সেই মানুষ টা এতো বড় মোটা সুই দিয়ে ১০ বারের মতো রক্তদান করলাম। সত্যি আজকে আমার নিজেকে অনেক গর্বিত মনে হচ্ছে। কারণ এমন কিছু ছেলে আছে আমার বয়সের যারা কখনো রক্তদান করেন নাই, অথচ চাইলে তারাও রক্তদান করতে পারে, কিন্তু করে না।
আমি পেরেছি, আমি পারবো ইনশা-আল্লাহ। যতো দিন বেঁচে আছি যদি সুস্থ থাকি আমি নিয়মিত রক্তদান করেই যাবো।
আমার সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন যেন ৪ মাস পর পর নিয়মিত রক্তদান করে মানুষের পাশে থাকতে পারি।
আমরা রক্তবন্ধু, রক্তের সম্পর্ক গড়ি।

মীম খান
ভলান্টিয়ার
রক্তবন্ধু পঞ্চগড়

শুধুমাত্র স্বেচ্ছায় রক্তদাতাগণ রেজিস্ট্রেশন করবেন।


শেয়ার করুন:

Facebook Comments