বাড়ি হইতে ৫৬৮ কি.মি দূরে…

শেয়ার করুন:

ইচ্ছে ছিল ১৯তম জন্মদিন ২২ আগস্টে প্রথম রক্তদানটা করে ফেলবো!

সুব্রত দাদার “রক্তদানের অপেক্ষায় বাংলাদেশ” গ্রুপে ফোন নম্বর সহ পোস্ট করেছিলাম “হবিগঞ্জে AB+ রক্তদান করতে চাই।” পোস্টটা অ্যাপ্রুভ করেছিলেন সানজানা সাঞ্জু আপু (পরে অবশ্য আপুর সাথে চায়ের আড্ডা ও পরিচয় হয়েছিল হবিগঞ্জে)।

সময়টা ছিলো ১০ আগস্ট ২০১৭
রোগীর প্রয়োজনের তাগিদে জন্মদিনে রক্তদান ঠিক রাখা সম্ভব হয় নি। আগে জীবন, পরে দিবস ! জন্মদিনের ১১ দিন আগেই রক্তদান করে ফেললাম।

ঘটনা প্রবাহঃ
পোস্ট করলাম, অ্যাপ্রুভ হলো। কিন্তু আমাকে রক্তের জন্য কেউ কল দিচ্ছে না কেন? ২ দিন ধরে রোগীর লোকের ফোনকলের জন্য অপেক্ষা করলাম, কিন্তু ফোন আসলো না। অবশেষে ৩য় দিন ফোন আসলো রোগীর লোকের।

রোগীর লোক: হ্যালো, আপনি কি শহীদুল্লাহ?

আমি: জ্বী, আমি শহীদুল্লাহ। আপনি কে?

রোগীর লোক: আমি অরুণোদয় থেকে বলছি। আপনি AB+ রক্তদান করতে চেয়ে “রক্তদানের অপেক্ষায় বাংলাদেশ” গ্রুপে পোস্ট করছিলেন। আজ দুপুরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে এক বোনকে রক্তদান করতে পারবেন? (মানুষটা আমার প্রিয় রাহুল দাদা, একজন ভলান্টিয়ার। রোগি ছিলো তার বন্ধুর বোন)

আমি: (বিজয়ের হাসি দিয়ে) অবশ্যই পারবো।

আলহামদুলিল্লাহ্! ক্লাস শেষ করে বন্ধু আকরামুলকে নিয়ে জীবনের ১ম রক্তদান সম্পন্ন করে ফেললাম। ততোদিনে বয়সটা আমার হয়ে গেছে ১৯বছর ১১মাস ১৯দিন। তাই ৪ মাস পূরণ না হওয়ায় পরবর্তী ২০ তম “জন্মদিনে রক্তদান” করা হলো না!

১ম, ২য়, ৩য় রক্তদান সম্পন্ন করার পর হঠাৎ হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরির কারণে থেমে গেল রক্তদান। দীর্ঘদিন পর সুস্থ হয়ে ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ রক্তদান করে ২য় বারের মতো হাঁটুর লিগামেন্ট ইনজুরিতে পরে থমকে যেতে হলো আবারও।

আলহামদুলিল্লাহ্।
অবশেষে সুস্থ হয়ে দীর্ঘ ১ বছর ৬ মাস ৮ দিন পর ২০ অক্টোবর ২০২০ইং তারিখে পঞ্চগড়ে ৭ম বারের মতো রক্তদান সম্পন্ন করলাম।

আমার বাড়ি ঠাকুরগাঁও, হবিগঞ্জ সরকারি পলিটেকনিকে পড়ালেখা করতাম।
সেই সুবাদে ১ম থেকে ৫ম রক্তদান হবিগঞ্জেই হয়েছে।
এরপর ৬ষ্ঠ রক্তদান করেছি নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। আর হ্যাঁ, নিজ জেলায় এটাই ছিলো আমার প্রথম রক্তদান!
৭ম রক্তদান পাশের জেলা হলেও একদম বাড়ির কাছে পঞ্চগড়ে।

ইন-শা-আল্লাহ! সুস্থ থাকলে নিয়মিত রক্তদান করে যাবো।

এডমিন,
মো. শহীদুল্লাহ
রক্তবন্ধু

roktobondhu.com


শেয়ার করুন:

Facebook Comments