রাতের শহরে চট্টলায়

শেয়ার করুন:

রাতের শহর তখন ধীরে ধীরে ব্যস্ততা ঝেড়ে ফেলে নিস্তব্ধতায় ডুবে যাচ্ছিল। দোকানের কাজ সেরে বাসায় ফিরতে ফিরতে ঘড়ির কাঁটা ১১টা ছুঁই ছুঁই। সারা দিনের ক্লান্তি যেন শরীরের প্রতিটি কোণে জমে বসেছিল। মনে হলো একটু বিশ্রাম নিয়ে রাতে নিজের কিছু কাজ সেরে নেব, কিন্তু মনটা যেন অন্য কিছুতে আটকে ছিল।

এমন সময় একটি ফোন এলো। একজন বোনম্যারো রোগীর জন্য রক্তের প্রয়োজন। ফোনটি পাওয়ার পর আর এক মুহূর্তও দেরী করার সুযোগ ছিল না। তাড়াতাড়ি রাতের খাবার সেরে তৈরি হয়ে বের হলাম। তখন ঘড়িতে ঠিক রাত ১২টা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রাত গভীর হলেও হাসপাতালের করিডোরগুলোতে রোগীদের স্বজনদের এক প্রকার নীরব ব্যস্ততা দেখতে পেলাম। আজ ২১তম বারের মতো রক্তদান করতে যাচ্ছি, প্লাটিলেট দিয়েছি ৬ বার, সব মিলিয়ে ২৭তম রক্তদান। প্রতিবারের মতো আজও মনে হলো, এই একটি পদক্ষেপ কাউকে নতুন জীবন দিতে পারে।

রক্তদান শেষে হাসপাতাল থেকে বের হতে হতে রাত আরও গভীর হলো। তবে মনে ভীষণ প্রশান্তি—জানি, হয়তো কারও জীবনে নতুন করে বাঁচার আশা জাগিয়ে তুলতে পেরেছি।

আমার আসলে প্লাটিলেট দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তারা আমার কাছে রাতে হোল ব্লাড নেয়। পরের দিন আবার প্লাটিলেট প্রয়োজন হলে একজন প্লাটিলেট ডোনারও সেই রোগীকে ম্যানেজ করে দেই৷ এই ম্যানেজ করে দিতে পারাটা আরেক প্রশান্তির অনুভূতি।

এস এম সাব্বির আলম
এডমিন, রক্তবন্ধু ও
হাটহাজারী সম্মিলিত রক্তদাতা ফোরাম।
১২ অক্টোবর, ২০২৪।


শেয়ার করুন:

Facebook Comments